নির্মাণাধীন কিংবা শিল্প কারখানার কাজে ব্যক্তি বিশেষে সবার অনেক বেশি ঝুঁকি থাকে। এসব জায়গায় দুর্ঘটনা খুবই একটি পরিচিত বিষয়। শরীরের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ মাথাকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কবল থেকে বাঁচানোর জন্য শ্রমিকদের তাই হেলমেট পরা জরুরি। আচমকা কোনো আঘাত কিংবা সূর্যের প্রখর আলো থেকে সুরক্ষা পেতে এই হেলমেটগুলো অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই এসব হেলমেটের নাম দেওয়া হয়েছে সেফটি হেলমেট। আবার এসব হেলমেটের যেমন আলাদা আলাদা রঙ রয়েছে তেমনি তাদের আলাদা আলাদা অর্থও রয়েছে। কেউ যদি এসব রঙের অর্থ সঠিকভাবে জানেন তাহলে তিনি হেলমেট দেখলেই বলে দিতে পারবেন যে, এই হেলমেট বহনকারী এই কাজ করেন। এসব হেলমেট বহনকারীদের দেখে সেই অনুযায়ী সহযোগিতা পাওয়া যায়। এখানে বিভিন্ন রঙের হেলমেট নিয়ে আলোচনা করা হলো:
সাদা হেলমেট:
সাদা রঙের হেলমেট সাধারণত প্রতিষ্ঠানের শীর্ষস্থানীয় বা নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিরা ব্যবহার করে থাকেন। এক্ষেত্রে সাইট ম্যানেজার, প্রকৌশলী, স্থপতি প্রভৃতি হতে পারে। মূলত এসব লোকদের যাতে খুব সহজেই চিহ্নিত করা যায় সেজন্য তাদের জন্য সাদা রঙেরে হেলমেট।
হলুদ হেলমেট:
যারা কায়িক শ্রমিক তাদের হেলমেটের রঙ হলুদ হয়ে থাকে। এ ধরনের শ্রমিকরা ভারি মেশিন অপারেট করে থাকেন কিংবা ভারি কোনো কাজ করে থাকেন। এসব শ্রমিকদের হলুদ রঙের হেলমেট হওয়ার আরেকটি কারণ হলো শ্রমিকরা যাতে কাজের সময় কারো দ্বারা বিরক্ত না হয়।
কমলা হেলমেট:
যারা গাড়ি থেকে মাল ওঠানামা কিংবা প্যাকিং কিংবা সড়কের কাজ করে থাকেন তারাই সাধারণত কমলা রঙের হেলমেট ব্যবহার করেন। কাজের সময় মাল বহনকারী ক্রেন অপারেটররা যাতে সহজে সেসব কর্মজীবীদের সন্ধান পেতে পারেন এজন্য চোখে পড়ার মতো রঙ হিসেবে কমলা রঙের হেলমেট তাদের পরতে দেওয়া হয়।
নীল হেলমেট: .
মূলত ইলেকট্রিশিয়ান, টেকনিশিয়ান কিংবা কারিগরি ঝুটঝামেলায় যুক্ত ব্যক্তিরাই নীল রঙের সেফটি হেলমেট পড়ে থাকে। এই রঙের হেলমেটের মাধ্যমেই সাধারণত ওই কর্মীর পেশাগত অবস্থান ও দক্ষতা সম্পর্কে অনুমান করা যায়।
সবুজ হেলমেট:
সবুজ রঙ মানেই নতুন, নিরাপদ এবং ইতিবাচক কিছুকেই বোঝানো হয়ে থাকে। সবুজ রঙের সেফটি হেলমেট পরিদর্শক বা নিরাপত্তা পরিদর্শক কিংবা সাইটে কাজ করতে আসা নতুন প্রশিক্ষণ কর্মীরা পড়ে থাকে।
লাল হেলমেট:
ফায়ার ব্রিগেডের কর্মীরাই কেবল লাল রঙের হেলমেট পড়ে। যেহেতু অগ্নি নিয়ন্ত্রণে সব রকম কাজ তাদের করতে হয়। তারা বিপদজ্জনক কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট বলে তাদেরকে লাল হেলমেট পড়তে হয়। আর লাল রঙ অর্থ হলো বিপদ।
শেষ কথা:
এতক্ষণ যে সেফটি হেলমেটের রঙ নিয়ে তথ্য উপস্থাপন করা হলো নিশ্চয় সেখান থেকে একটি ভালো ধারণা পেয়েছেন। এখন থেকে আপনি কাউকে কোনো সেফটি হেলমেট পড়তে দেখলে তার কালার দেখে বুঝতে পারবেন তার কাজ আসলে কী।
তবে আরেকটি কথা উল্লেখ না করলেই নয়, সেটি হলো- এসব সেফটি হেলমেটের রঙের কোড কিন্তু বিশ্বজনীন নয়। বিভিন্ন দেশে কোম্পানি ভেদে কিছুটা ভিন্ন নিয়ম অনুসৃত হয়। তাই হেলমেট দেখে চেনা গেলেও সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে কি ধরনের নিয়ম অনুসরণ করা হয় তা জেনে নিতে হবে।